মেঘরাজ্য সাজেক আর মনোহর কাপ্তাই লেক ভ্রমন।

মনোরম প্রকৃতির আহ্বান এড়াতে পারেন খুব কম লোকই আছেন। পাহাড়, নদী, জলাশয়, দিগন্তজুড়ে সবুজ, ছায়াঘেরা বন-বনানী কিংবা আঁকাবাঁকা মেঠোপথ চিরকালই আমাকে আকর্ষন করতো। মনে আছে আমার বয়স সতেরো পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই সেই ১৯৭২ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারী প্রকৃতির রূপ উপভোগের জন্য প্রথম বাড়ি থেকে পালিয়ে ভারতে যাই। আজ ৬২ বৎসর বয়সে এসেও প্রকৃতির সৌন্দর্য‌ উপভোগের লোভ একটুও কমেনি। তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রকৃতির আহ্বানে সাড়া দিয়ে গত ২৩ শে নভেম্বর ২০১৬ হঠাৎ সংক্ষিপ্ত পরিকল্পনায় খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি ভ্রমনে বেড়িয়ে পড়লাম। সাথে প্রিয় কলিগ শফিকুল ইসলাম। তার সাথে আমার বয়সের পার্থক্য অনেক হলেও মানসিকতায় একটুও পার্থক্য চোখে পড়েনি। এমন শক্ত সামর্থ যুবকের সাথেইতো পাহাড়ে যাওয়া উচিত। তাই তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম।

1-20161124_162138

ঢাকার আরামবাগ, ফকিরাপুল, সায়েদাবাদ থেকে এসি/নন এসি বাসে খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। আমরা  ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে পূর্বেই সংগ্রহ করা টিকিট (নন এসি ভাড়া প্রতি টিকিট ৫২০ টাকা) নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা হতে ইকোনো বাসে উঠলাম রাত প্রায় সাড়ে এগারোটায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বারইয়ারহাট থেকে আমাদের গাড়ি বাম দিকে বাঁক নিয়ে শুধুই উঁচু-নিচু, খাঁড়া-ঢালু, ডানে-বামে এঁকেবেঁকে পাহাড়ী পথে চলতে লাগলো। রাতের অন্ধকারে যদিও স্পষ্ট সবকিছু দেখতে পারছিনা, কিন্তু অনুমান করতে পারছি দিনের বেলা আসলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য‌ উপভোগ করা যেত। যাই হোক, পরদিন ভোরে খাগড়াছড়ি পৌঁছলাম। প্রাকৃতিক কর্মাদি সেড়ে নাস্তা করে সাজেক যাওয়ার গাড়ি খুঁজতে গিয়ে জানতে পারলাম এখান থেকে কোন বাস চলেনা। যেতে হবে চাঁন্দের গাড়ি নামক পিকআপ অথবা জীপ গাড়ি রিজার্ভ নিয়ে। ভাড়া ৭২০০ টাকা। সকলের একই রেট, এক টাকাও কম হবেনা। রশিদ মাহাবুব বাবু নামের গাজীপুরের গার্মেন্টসের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা হল তিনিও সাজেক যেতে চান। একজন পিকআপ ড্রাইভার সাদ্দামের সাথে কথা হল- সে জানাল আরও দুইজন যাত্রী আছে তার। পরিচয় হলাম শিমুল নামক উত্তরার বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী ভাইয়ের সঙ্গে তার সাথে আছেন আরেকজন সুন্দরী।

2-20161124_140948-2

সকাল ১০টায় সাদ্দাম আমাদের ৫ জনকে নিয়ে তার পিকআপ স্টার্ট করল। শুকনা খাবার ও পানি নিয়ে নিলাম সাদ্দামের কথা মত। সেই সাথে শিমুল ভাই আমাদের জন্য কটেজ এবং লাঞ্চের অর্ডার বুকিং দিয়ে দিলেন তখনই। কেননা সাদ্দাম বলল অগ্রিম বুকিং না দিলে খাবারও মিলবেনা এবং থাকার ব্যবস্থাও হবেনা। সাদ্দামের সাথে কথায় কথায় জানলাম গাড়িটি তার নিজেরই। ১০ বৎসর ধরে সাজেকের লাইনে গাড়ি চালায়। আসল নাম আব্দুর রহমান। এ পথেই এক জায়গায় তার বাড়িটিও দেখাল। সব শুনে চলার পথে বুকে অনেকটা সাহস পেলাম। লোকটির মধ্যে বিশেষ এক যোগ্যতা হল অল্প সময়ের মধ্যেই অপরিচিত আমাদেরকে অতি পরিচিতের মত আপন করে নিল। আমরা সকলেই তার আচার ব্যবহারে সন্তুষ্ট। সে শুধু আমাদের গাড়ির ড্রাইভার নয়, আমাদের ট্যুরিস্ট গাইড, এমনকি বন্ধুর মতই তার সার্বক্ষণিক সহযোগিতা আমরা পেয়েছি। পাঠকদের কাজে লাগতে পারে ভেবে তার যোগাযোগ নাম্বারটি দিয়ে দিলাম- ০১৮৬৯১০৪০০০।

3-20161124_162713

সাজেকের অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের উত্তর-পূর্ব কূল ঘেঁষে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায়। এই সাজেক ভ্যালির পাশেই ভারতের মিজোরাম। শুনেছি, বর্ষা মৌসুমে চিরসবুজ সাজেক সাদা মেঘে আচ্ছাদিত থাকে। অনেকে আবার সাজেককে বাংলার দার্জিলিং হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। সবমিলিয়ে সাজেক এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমির নাম তাতে কোন সন্দেহ নেই।

4-20161124_125405

সাদ্দামের থেকে জেনে নিলাম, খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৬৯ কিলোমিটার। ভয়ঙ্কর উঁচু-নিচু, খাঁড়া-ঢালু, ডানে-বামে এঁকেবেঁকে পাহাড়ী পথে চলতে লাগলো সাদ্দামের পিকআপ! সম্পূর্ন পথটিই এমন, সমতল নেই বললেই চলে। কখনো উপুর হয়ে নিচের দিকে নামছি! কখনো প্রায় চিৎ হয়ে উপর দিকে উঠছি! কখনোবা পাহাড়ের গাঁ বেঁয়ে ডানে বা বামে চলছি! একটু এদিক সেদিক হলেই একেবারে শত শত বা হাজার ফুট নিচের পাহাড়ী খাদে হারিয়ে যেতে হবে জীবন থেকে! সাদ্দামের কাছ থেকে জেনেছি, সাজেকের উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১৯০০ ফুট। ভীরু লোকেরা সত্যিই ভয় পেয়ে চিৎকারও করে উঠতে পারে। কিযে রোমাঞ্চকর তা সে পথে না গেলে বোঝানো যাবেনা। গাড়ি থেকে দেখা যাবে,- দৃষ্টিনন্দন পাহাড়ী নদী কাচালং-মাচালং ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার অপূর্ব সকল দৃশ্য। যাওয়ার পথে ৩২ কিঃ মিঃ দূরত্বে হাজাছড়া ঝর্ণায় পৌঁছে সেখানের মনোরম সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে সকলে ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে উঠলাম। সেখানে পৌঁছানোটাও ছিল এক এডভেঞ্চারের মত। তবে সেখানে যেতে শফিক সাহেব বার বারই আমার প্রতি তার অতিরিক্ত কেয়ারের বিষয়টি স্পষ্ট করছিলেন। আমিও তাকে পেয়ে সাহসী হয়ে উঠছিলাম। সেখানে যাওয়ার পথে আরও কতকগুলি ছেলে মেয়েকে পেলাম যারা আমাদের মতই রোমাঞ্চকর এডভেঞ্চার অভিজ্ঞতা নিতে হাজাছড়া ঝর্ণায় যাচ্ছে।

5-20161124_094203

সেখান থেকে ফিরে আবার গাড়িতে সেই আঁকাবাঁকা উঁচু নিচু পথে চলতে থাকলাম। বাগেরহাট নামক স্থানে এসে সকল গাড়ি থামছে। বেলা ১১টায় সেখান থেকে সাজেক পর্যন্ত সম্পূর্ণ রাস্তায় আগে পিছে আর্মির গাড়ি নিয়ে স্কর্ট দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সকল গাড়িকে। পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে কোন গাড়িকেই একা ছাড়ছেনা। উল্লেখ্য যে, সাজেক রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্গত হলেও খাগড়াছড়ির বুক চিরে এঁকেবেঁকে, উঁচু-নিচু হয়ে সাজেক অবধি চলে যাওয়া সড়ক পথই চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। সাজেকের পর্যটকরা খাগড়াছড়ি জেলা সদরে অবস্থানের ফলে অনেকটাই পাল্টে গেছে খাগড়াছড়ির অর্থনৈতিক অবস্থা। বিশেষ করে পরিবহন, আবাসিক হোটেল ও খাবার হোটেলের ব্যবসা জমে উঠেছে খাগড়াছড়িতে। এছাড়াও হস্তশিল্প ও তাঁতশিল্পের দোকানেও বেচাকেনা কম নয়। এই সাজেক চাঁন্দের গাড়ির মালিক এবং চালকদের ভাগ্যের চাকাও ঘুরিয়ে দিয়েছে। জানতে পারলাম,- সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে কমপক্ষে শতাধিক গাড়ী সাজেক যাচ্ছে এ ছাড়াও প্রতিদিন ২০-৫০টি গাড়ীতে ৩০০- ৫০০জন পর্যটক আসা-যাওয়া করছেন। সিজনে এবং দুই-তিন দিনের বন্ধের সময়ে এই সংখ্যা আরও অনেক বৃদ্ধি পায়।

6-20161124_140724

আরও উল্লেখ্য যে, সাজেক পর্যটন স্পট শুধুমাত্র স্থানীয় পর্যটনের উন্নতি ঘটায়নি বরং পুরো খাগড়াছড়ি জেলার পর্যটন সেক্টরকে পাল্টে দিয়েছে। সাজেক ভ্রমণের আগে বা পরে দূর দূরান্তের দর্শনার্থীরা দেখে যাচ্ছে খাগড়াছড়ি আলুটিলার রহস্যময় সুড়ঙ্গপথ, রিসাং ঝর্ণা, হাজাছড়া ঝর্ণা, আলুটিলা তারেং, পানছড়ির শান্তিপুর অরণ্য কুটির, বৌদ্ধ বিহার, শান্তিপুর রাবার ড্যাম, মানিকছড়ির রাজবাড়ি, রামগড়ের সীমান্তবর্তী চা-বাগান, মাইসছড়ির দেবতাপুকুর, মহালছড়ির এপিবিএন লেক, জেলা সদরের পানখাইয়াপাড়ার নিউজিল্যান্ড পার্ক ও জেলা পরিষদের হর্টিকালচার পার্ক ইত্যাদি। এছাড়াও, সাজেকে প্রবেশের মাইল দু’য়েক আগে হাউসপাড়ার ঝর্ণাটিও নাকি বেশ মনোমুগ্ধকর। উল্লেখ্য যে, আমরা সময় স্বল্পতার জন্য অতটা দেখতে পারিনি, তবে আগামীতে সময় নিয়ে এসে সবকিছু ঘুরে দেখার ইচ্ছে আছে। খাগড়াছড়ি জেলা ছাড়াও রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে রয়েছে বিভিন্ন পাহাড়ী পর্যটন স্পট। আমার ধারনা সেইসব পর্যটন স্পটগুলোকে পেছনে ফেলে দেশ সেরা পর্যটন স্পটের স্থান দখল করবে সাজেক।

7-20161124_125949

বাঘাইহাট থেকে সাজেক পর্যন্ত চলার পথে গহীন অরণ্যময় সবুজের বুক চিরে আঁকাবাঁকা সড়কের দুই পাশে মাঝে মধ্যেই দেখা মিলে স্থানীয় অধিবাসীদের বাসস্থান। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছোট ছোট কোমলমতিরা দুই হাত তুলে অভিনন্দন জানাচ্ছে অচেনা অতিথিদের। অতিথিরাও ফিরতি অভিনন্দন দিয়ে বলে দিচ্ছে- আবার আসিব ফিরে। দুচোখ ভরে পাহাড়ী অরণ্যের শোভা দেখতে দেখতে, আর পাহাড়ের গাঁ বেঁয়ে ভয়ঙ্কর উঁচু-নিচু, খাঁড়া-ঢালু, ডানে-বামে এঁকেবেঁকে পাহাড়ী পথে চলার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিয়ে দূপুর আড়াইটায় আমরা সাজেক প্রবেশের শুরু রুইলুই পাড়ায় পৌঁছলাম। আগেই বুকিং দেয়া কটেজে উঠে প্রাকৃতিক কর্মাদি সেড়ে ফ্রেশ হয়ে, বুকিং দেয়া হোটেলে গিয়ে লাঞ্চ করলাম। লাঞ্চ শেষে কটেজে এসে সবাই বিশ্রাম নিলাম।

8-20161124_131037

সরকারের আন্তরিকতা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও তত্ত্বাবধানে তৈরি সাজেক পর্যটন কেন্দ্র। উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরী, আধুনিক পর্যটনের আদলে সাজেককে সাজানো, সুপেয় পানি এবং সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করায় আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে সাজেকে। আর তাতে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনমান পাল্টে গিয়েছে। জানতে পারলাম, সাজেকে সেনাবাহিনী পরিচালিত দুইটি রিসোর্ট রয়েছে, সাজেক রিসোর্ট এবং রুন্ময় রিসোর্ট। সাজেক রিসোর্টে ৪ টি রুম রয়েছে। যেগুলোর ভাড়া ১০ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে। সাজেক রিসোর্ট অগ্রিম বুকিং নাম্বার ০১৭৬৯৩০২৩৪৬। যে কোন সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য এই রিসোর্টের ছাদ ভাড়া দেয়া হয়, তবে সর্বোচ্চ ৩০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। স্থানীয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগের জন্য কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা পূর্বে  যোগাযোগ করার নাম্বার সমূহ ০১৮৪৭০৭০৩৯৫/০১৮৬৪৬৬৪৭৮৬। রুন্ময় রিসোর্টে ৫ টি রুম রয়েছে। যেগুলোর ভাড়া সাড়ে ৪ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা। এছাড়া রয়েছে বহু বেসামরিক হোটেল বা কটেজ যেমন,- সাজেক লুসাই কটেজ, আলো রিসোর্ট, মারতি রিসোর্ট, হ্যাপি টং রিসোর্ট, য়ারুং রিসোর্ট, মনিং ষ্টার হোটেল, হেপতং রিসোর্ট, শাহারা রিসোর্ট, মাখুম রিসোর্ট, লুসাই লজিং। বর্তমানে আরো কয়েকটি রিসোর্ট বা কটেজ চালু হওয়ার পথে। এগুলির প্রতি রাতের ভাড়া ডাবল বেডের এক রুম ১০০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত। মনে হয় সুনির্দিষ্ট করা নেই, সুযোগ বুঝে আদায় করে। আলাপ করে জানা গেল, ১৬ই ডিসেম্বর এবং ২৫ ডিসেম্বরের ছুটির দিনগুলির জন্য ইতিমধ্যেই অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে এবং কোথাও কোথাও হচ্ছে।

9-20161125_103417

প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য দুইটি রিসোর্টের নাম্বার দিলাম- আলো রিসোর্ট যোগাযোগ নাম্বার ০১৮৬৩৬০৬৯০৬, মনিংষ্টার হোটেল যোগাযোগ নাম্বার ০১৮২৭৩৫৯৭০০/ ০১৮২৭৩৬০৪৯০। তবে, অল-ইন-ওয়ান সাদ্দামের নাম্বার (০১৮৬৯১০৪০০০) থাকলেই হয়, সে-ই থাকা-খাওয়ার সব হোটেল অগ্রিম বুকিং দিয়ে রাখতে পারবে তার সাথে যোগাযোগ করলে। গুরুত্বপূর্ণ কথা হল সাজেকে শুধুমাত্র রবি এবং টেলিটক নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে, অন্য কোন অপারেটরের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়না। একটিমাত্র টাওয়ার রুইলুই পাড়াতেই দেখলাম। আর হ্যাঁ, সাজেকে বিদ্যুৎ নাই। আছে সার্বক্ষণিক সোলার প্যানেল, আর আছে জেনারেটর সার্ভিস, যা রাতে ১০ টা অবধি সার্ভিস দেয়। মোবাইল চার্জ দিতে পাওয়ার ব্যাঙ্ক না থাকলে অসুবিধা হত আমাদের।

10-20161124_115048

এইসব রিসোর্ট বা আবাসিক হোটেলের মালিক স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাসিন্দাগণ। এসব হোটেলের কর্মচারীরাও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর। এসব হোটেলে প্রতিদিন গড়ে ১৫০-২০০ জন পর্যটক রাত্রিযাপন করে থাকে। আবার এসকল রিসোর্ট বা আবাসিক হোটেলের নিজস্ব রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এসব রেস্টুরেন্টে আবাসিক ও অনাবাসিক পর্যটকদের খাবার সরবরাহ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এগুলিকে অর্ডার হোটেল বলে। যেমন,- মারতি অর্ডার হোটেল। এসব অর্ডার হোটেলে আগেই খাবারের অর্ডার দিতে হয়, নতুবা না খেয়ে থাকতে হতে পারে। আলুভর্তা, ডিমভাজা, ডাল সহ ভাত খেলে প্রতিজন ১০০ টাকা, আর স্থানীয় মুরগীর মাংস, ডাল সহ ভাত ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। আমি মুরগীর মাংস দিয়ে ভাত নিয়ে খেতে পারিনি, আমার কাছে মনে হয়েছে মুরগী খুব বড় সাইজের ছিল এবং শক্ত রয়েছে। তবে আলুভর্তা, ডিম, ডাল দিয়ে ভাত খেয়েছি তৃপ্তি সহকারে।

11-20161124_135304

জানলাম,- রুইলুই পাড়ায় পাংখো ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতি। এখানে সেনাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় পর্যটকদের জন্য বেশকিছু বিনোদনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। যেমন,- হ্যারিজন গার্ডেন, ছায়াবীথি, রংধনু ব্রীজ, পাথরের বাগান উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য একাধিক বিশ্রামাঘার ও ক্লাবঘরও রয়েছে রুইলুই পাড়ায়। সাজেকের বুকের মাঝ বরাবর রয়েছে প্রাক্তন মেম্বার থাংগো লুসাইয়ের লাল সবুজে ঘেরা বাঁশের তৈরী বাসভবন। সাজেকের সর্বশেষ সীমানা কংলাক। কংলাক রুইলুই থেকে আরও দেড়ঘন্টার পায়ে হাঁটার পথ। কংলাকে নাকি পাংখোয়াদের নিবাস। পাংখোয়ারা নাকি সবসময় সবার উপরে থাকতে বিশ্বাসী। তাই তারা সর্বোচ্চ চূড়ায় বসবাস করে। আর কংলাকের পরেই ভারতের মিজোরাম। এক কিশোরীর কাছ থেকে জানলাম সে নাকি মিজোরামের স্কুলেই পড়ে। সাজেক থেকে যেদিকেই কেউ যেতে চায় তাকে পাহাড় ডিঙ্গিয়েই যেতে হবে। পাহাড়ের অনেক নীচ থেকে ঝর্ণার পানি আনতে দেখলাম। শুনলাম প্রতি লিটার পানি ১ টাকায় কিনে হোটেল-রিসোর্টের জন্য।

12-20161124_130831

বিশ্রাম শেষে বিকাল ৪ টায় বেড়ুলাম ঘুরতে। ছবি তোলার হিড়িক পড়ে গেল। বলতে ভুলে গেছি, খাগড়াছড়ি ছেড়ে আসার পর থেকেই ছবি তোলা, ভিডিও করা শুরু হয়েছিল যার যার মোবাইলের ক্যামেরায়, আর তা চালু ছিল রাতেও। যতই দেখি ততই মুগ্ধ হই প্রকৃতির রূপে। সোবহান আল্লাহ্! এই ক্ষুদ্র পৃথিবীর সামান্যাংশের রূপই এত বিচিত্র! এত মনমুগ্ধকর! আর এর স্রষ্টা কত সুন্দর! কত বিচিত্র! তাই বুঝি আল্লাহ্ বলেছেন,- “তোমরা আমার সৃষ্টিকে আবার আবার করে দেখ, তোমাদের দৃষ্টি তোমাদের কাছে ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসবে। কোথাও কোন নিয়মের ব্যতিক্রম পাবেনা।”

13-20161124_141027

আগেই উল্লেখিত সবকিছু দেখে সাজেক থেকে আরও উচ্চতায় কতক পথ পিকআপ নিয়ে গিয়ে  তারপর গাড়ি সেখানে রেখে কংলাক পাহাড়ের চূঁড়ায় ওঠার অভিযান। সতর্কবানী লেখা সাইনবোর্ডে দেখলাম,- শিশু, বৃদ্ধ, হার্টের রোগী, উচ্চরক্তচাপের রোগী এবং অসুস্থদের পাহাড়ে ওঠা নিষেধ। আমার মনে হল ইনশা আল্লাহ্ আমি এই অভিযানের যোগ্য। অভিযানটি ছিল আমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা। এখানেও সহযাত্রী সবাই আমাকে খুব কেয়ার নিচ্ছে। হয়তো মনে মনে আমাকে যোগ্য মনে করছেনা ভেবেই এই বিশেষ কেয়ার নিচ্ছে। বিশেষ বিশেষ জায়গাগুলিতে শফিক সাহেব আমাকে হাত ধরে টেনে তুলছে। সত্যি বলতে কি শফিক সাহেবকে পেয়েই আমি অতি উৎসাহী হয়ে ওঠেছিলাম এই ট্যুরে এবং পাহাড়ে ওঠার দুঃসাহসটাও দেখিয়েছিলাম একই কারনে। বিশেষ উল্লেখ্য যে, পাহাড়ে ওঠার জন্য সকলেই চিকন বাঁশের লাঠি কিনে নিয়েছি। যা এখানে প্রতিটি ১০ টাকায় কিনতে পাওয়া যায়। কংলাক পাহাড়ে ওঠার ব্যাপারটি সব চেয়ে বেশি এডভেঞ্চার সমৃদ্ধ। সর্বোচ্চ চূঁড়ায় ওঠে দেখলাম দর্শনার্থীর ভীড়ে তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। বেশীর ভাগই পরিবার-পরিজন নিয়ে উপভোগে এসেছে। প্রায় শতাধিক যুবক-যুবতিকে পেলাম, যাদের মধ্যে মাত্র একজনকে দেখলাম আমার বয়সী! খুবই ভাল লাগলো! আল্লাহ্পাকের শুকরিয়া করলাম। মনে মনে গর্ববোধও করলাম পাহাড়ের চূঁড়ায় ওঠতে পারার যোগ্যতা আছে ভেবে। সেখানের চতুর্দিকের ছবি নিলাম, সূর্য ডোবার ছবি নিয়ে নেমে আসলাম সবাই।14-20161124_161829

সন্ধ্যায় সকলের সাথে হেলিপ্যাডে বসে অন্ধকারে খোলা আকাশ দেখলাম। মনে হল এত জ্যোতিষ্ক আকাশে আগে দেখিনি। কিংবা এত বিস্তৃত আকাশকে খালি চোখে কখনই দেখিনি। চতুর্দিকে পাহাড় আর পাহাড়, যতদূর দেখা যায় শুধুই ফাঁকা, তার মাঝ থেকে আকাশকে যেন অন্য রকম মনে হচ্ছে। আমরা সেখানে মোম জ্বালিয়ে বেলুন উড়ালাম। অনেক মজা হল, ডিনার টাইমের পূর্ব পর্যন্ত আমরা সেখানেই কাটিয়ে এলাম। হ্যালিপ্যাডের পাশে অবস্থিত ঝাড় ভোজ, মিরিংজার, চিংলক সব জায়গায়ই দর্শনার্থীদের ভীর চোখে পড়ল।

15-20161124_161429

ডিনার শেষে কটেজে বসেই রাত ১২ টা ১ মিনিটে সহযাত্রী শিমুল ভাইয়ের বার্থ ডে কেক কাটা হল। ছোট ছোট কেক জুড়ে বানিয়ে ছিল আরেক সহযাত্রী বাবু ভাই। সহযাত্রী বললেও আমরা কিন্তু ততক্ষণে বন্ধুর চেয়েও বেশি কিছু হয়ে ওঠেছিলাম। ভুলেগিয়েছিলাম বয়সের পার্থক্য। ভুলেগিয়েছিলাম মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেও কেউ কাউকে চিনতামনা। আশাকরি আমাদের এই রিলেসন সবসময়ের জন্যই অক্ষুন্ন থাকবে। বার্থ ডে অনুষ্ঠান শেষেও আমরা জেগে ছিলাম ততক্ষণ যতক্ষণ না ঘুমিয়ে পেড়েছিলাম।

16-20161124_171616

পরদিন ভোর ৬ টা বাজতেই বাবুভাই ওঠে বাহিরের দৃশ্য দেখে চিৎকার করে বলছেন, বড় ভাই জলদি ওঠেন, কাল রাতে যেখানে পাহাড় ছিল সেখানে এখন নদী হয়ে গেছে। তার ডাকে সবাই ওঠে চোখ কচলিয়ে বাহিরে বেড়িয়ে দেখি সত্যিইতো! কাল রাতেতো এখানে পাহাড় ছিল, নদী কি করে হল? যেদিকে তাকাই সবদিকেই দেখি নদী। আস্তে আস্তে সূর্যের আলো বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর কুয়াশার মত মেঘ সমূহ কেটে যাচ্ছে। গতকালকের দেখা পাহাড়গুলি সুস্পষ্ট হতে বেলা প্রায় ১০টা বেজে গেল। জানি আমার পাঠকদের বিশ্বাস হচ্ছেনা। বিশ্বাস আমাদেরও হয়নি প্রথমে। কিন্তু বিশ্বাস না করেও উপায় ছিলনা। বিশ্বাসের দলিলও দিলাম নিচে।

17-20161125_063045

তবে সাজেকের এতসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য‌্য থাকলেও কিছু কিছু চিত্র মন খারাপ করে দেয়। যার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি ঝুপড়ির ঘর। এই জরাজীর্ণ ঘরগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে কয়েকটি পরিবার। বুঝা যায় তাদের অর্থনৈতিক অবস্থাও বেশ নাজুক। ঝুপড়ির ঘরের আশপাশ এলাকায় অনেকেই রিসোর্ট বানিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, সড়কগুলো উন্নত কাঠামোর আদলে গড়া হলেও কোথাও কোথাও ভাঙ্গন ধরেছে।

18-20161125_061335

শুনলাম, সাজেকের অপরূপ সৌন্দর্যের বাহারী দৃশ্য উপভোগে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক সেনাপ্রধানসহ একাধিক সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা পরিদর্শন করেছেন। সাজেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সাজেককে জনসাধারণের সুবিধার্থে আরও বেশী দৃষ্টিনন্দন করতে কাজ করছে সেনাবাহিনী।

19-20161125_064701

পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্বিতীয় দিন কাপ্তাই লেক হয়ে রাঙ্গামাটি যাবো, আর রাঙ্গামাটি থেকে রাতে ঢাকার বাসে ফিরব। সেজন্য সেন্টমার্টিন নামক এসি বাসের টিকিটও কনফার্ম করা হয়ে গেল। সকাল ১১ টায় পিকআপ নিয়ে আর্মি স্কটে আমরা দিঘীনালা আসলাম দূপুর প্রায় সাড়ে বারোটায়। সেখান থেকে ৮০০ টাকায় সি এন জি রিজার্ভ করে লংগদু লঞ্চ ঘাট আসি প্রায় আড়াইটায়। প্রাকৃতিক কর্ম সেড়ে একটু ফ্রেস হয়ে নিলাম। সুলতান বোট সার্ভিসের একটি বোট ৩০০০ টাকায় ভাড়া করি রাঙ্গামাটি যেতে। কন্ট্রাক্ট হয় সুবলং ঝর্ণা, ঝুলন্ত ব্রীজ, রাজবন বিহার, জুম ঘর, পেদা টিং টিং, কাট্টলী বিল ঘুরে ঘুরে দেখাবে। এইগুলি তার ভিজিটিং কার্ডেই লিখে রেখেছে। কার্ডে তার যোগাযোগ নাম্বার লিখা আছে তিনটি- ০১৫৫৩১২৬৫৭৭, ০১৮৭৪৭৭৮৫৭৪, ০১৮২৮৮০৯৮২৪।

20-20161125_152603

লংগদু ঘাট থেকেই খাবার প্যাকেট করে নিলাম ভাত, মুরগীর মাংস, ডাল। দেড়ি না করে সাথে সাথেই বোট ছেড়ে দিল। বোটে বসে যখন খেতে নিলাম, তখন বুঝলাম এ খাবার আমার জন্য নয়। খাবারগুলি ছিল একেবারেই বাজে রান্না। আমি সম্পূর্ণটাই পানিতে ফেলে দিয়ে বিস্কুট ও কলা ছিল সাথে তাই খেলাম। পরবর্তীতে যাওয়ার সময় অবশ্যই খেতে পারব এমন খাবার নিয়েই লংগদু যাত্রা করব। আপনারাও যদি যান অবশ্যই খাবার নিয়ে যাবেন। আর যদি না নেন, তবে সেখানে কলা, রুটি, বিস্কুট, জুস এবং পানীয় এগুলি পাবেন। হোটেলের খাবার মুখেই তুলতে পারবেননা।

21-20161125_165345

খাওয়ার কষ্টটা একদমই ভুলে গেলাম যখন দেখলাম,- নদীর দুই পাশে সাড়ি সাড়ি পাহাড়ের দৃশ্য ছবির মত! ৬৭ কিলো মিটারেরও বেশি দীর্ঘ কাপ্তাই লেক। সম্পূর্ণ পথটাই এত চমৎকার যে সবাইকে অভিভূত করে ছাড়বে! এটি নাকি এশীয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ কৃত্রিম লেক। চতুর্দিকে বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রেখে কৃত্রিম জলাশয় সৃষ্টি করে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরী করেছিল ১৯৬০ সালে। কাপ্তাই লেক আমাদের বৃহৎ মৎস্য ভান্ডারও। এছাড়া দূর্গম অঞ্চলে মালামাল পরিবহনেও সুবিধা এনে দিয়েছে এই লেক। এখান থেকে মৎস্যজীবী সহ বহু লোকের জীবিকা নির্বাহ হয়ে থাকে। ছোট ছোট লঞ্চ, স্পীডবোট ও ট্রলারবোট চলছে। মাঝে মাঝে জেলে নৌকা দেখা যাচ্ছে।

22-20161125_161306

এখানে সেখানে দ্বীপের মত টিলার উপর ঘর-বাড়ি দেখা যাচ্ছে। আসলে টিলা নয়, এগুলিও পাহাড়। জলভাগের নীচে তলিয়ে গেছে সবচেয়ে ছোট পাহাড়গুলি। তারচেয়ে যেগুলি বড় ছিল সেগুলিকেই টিলার মত মনেহয়। আর সবচেয়ে বড় পাহাড়গুলিকে দুইপাশে সাড়িবদ্ধ দেখা যাচ্ছে। কি যে চোখ জুড়ানো দৃশ্য না দেখলে কেউ বুঝবেনা! আমরা যতই দেখছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি। সত্যিই এই প্রথম আমি এ ধরনের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার আনন্দ নিচ্ছি। এসব দৃশ্য দেখতে দেখতে এমন জায়গায় পৌঁছলাম যেখানে পাহাড় গুলি খুবই কাছাকাছি। এত কাছের থেকে পাহাড় দেখা সেটা বোধ হয় এখানেই সম্ভব। সবাই আমরা ছবি তোলায় খুবই ব্যস্ত হয়ে ওঠলাম। শুভলং ঝর্ণা দেখলাম, কিন্তু এই সময়ে ঝর্ণায় পানি আসবে কোথ্থেকে, তবু ঝর্ণার ছবি নিলাম। সময় অভাবে বোট থেকে নামলাম না।

23-20161125_161223

আস্তে আস্তে সূর্য অস্ত যাচ্ছে। দিগন্তরেখার লাল আভা হারিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে। দূরে রাঙ্গামাটি ঘাটের বাতি দেখা গেল। জেলেরা জাল ফেলে জালের সাথে মাঝে মাঝে বাতি জ্বালিয়ে রেখেছে সেইসব মিটি মিটি আলো দূর থেকে দেখতে পেলাম। এ যেন এক স্বপ্নরাজ্য ঘুরে এলাম। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ রাঙ্গামাটি ঘাটে নেমে অল্প হেঁটে বাস কাউন্টারে গেলাম। তারপর প্রাকৃতিক কর্মাদি সেড়ে ফ্রেস হয়ে ডিনার করলাম কাছেরই একটি ভাল মানের রেস্টুরেন্টে। তৃপ্তি সহকারে খেয়ে বাসে ওঠলাম। রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ঠিক সময়ে বাস ছাড়লো। ভোর পৌনে চারটায় আমরা নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় নেমে সিএনজি নিয়ে বাসায় চলে গেলাম।

24-20161125_170119

এ যাত্রা এখানে শেষ হলেও মনের মধ্যে কেবলই সেইসব ছবি মনকে অন্দোলিত করছে। মন বলছে সুযোগ পেলেই সে ছুটে যাবে আবার সেই মেঘরাজ্য সাজেক আর মনোহর কাপ্তাই লেক দেখতে। তবে আরেকটু সময় বেশি নিয়ে যেতে হবে, নতুবা ভালভাবে সবকিছু দেখা সম্ভব নয়। পরিশেষে পাঠকদের কাছে নিবেদন, যেন সকলেই বেশি বেশি করে এই লেখাটিকে শেয়ার করেন। যাতে করে অন্যান্য ভ্রমনপিপাসুরা একটি পরিপূর্ণ গাইডলাইন পেয়ে উপকৃত হতে পারেন। আমরাতো কিছু না জেনেই শুধু নাম আর বর্ননা শুনেই ছুটে ছিলাম সেজন্য কিছু মাশুলও দিতে হয়েছে আমাদের। অন্যদের যাতে মাশুল দিতে না হয় সেজন্যই বিস্তৃতভাবে বিস্তারিত লিখলাম। আশাকরি আমার পাঠক-পাঠিকাদের ভাল লেগেছে।

25-20161125_161105

 

 

পূর্বে প্রকাশিত এখানে- http://www.somewhereinblog.net/blog/shahidmridha/30171810