সম্ভাব্য আত্মহত্যাকারীর হাতের রেখা চিনুন

ইদানিং ব্লু হোয়েল গেমের পরিনতিতে বিশ্বব্যাপী বহু লোকের আত্মহত্যার কথা জানা যায়, যাদের মধ্যে বাংলাদেশেরও দুজন কিশোর-কিশোরীর করুন মৃত্যু আমাদেরকে মর্মাহত করে! অনেক অভিভাবকের উদ্বেগের কথা বিভিন্ন মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে উঠে আসে। এই মুহূর্তে সকল অভিভাবকের উদ্বেগের অবসানকল্পে আমার পক্ষথেকে হস্তরেখাবিদ্যায় সম্ভাব্য আত্মহত্যাকারীর হাতের রেখার পরিচয় দেয়া নৈতিক দায়িত্ব মনে করে এই বিষয়ে লিখছি। তার আগে জানা দরকার মানুষ আত্মহত্যা করে কেন? পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, জানা-অজানা প্রিয়জন থেকে শুরু করে চারপাশের পরিবেশ-প্রকৃতি সবকিছুকে ভালবেসে মানুষ জীবনযাপন করে। তার ওপরে মানুষ সবচেয়ে ভালবাসে তার নিজেকে। তারপরও এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে সে চলে যেতে চায় কেন? নিজেকে এত ভালবেসেও সে আত্মহণন করতে যায় কেন?

গভীর কোন দুঃখ, শোক, ব্যাথা, বেদনা, উদ্বেগ প্রভৃতি যখন মানুষের জীবনে আসে তখন আত্মসম্বরণ করাই মানুষের ধর্ম। কিন্তু যাদের মধ্যে এই আত্মসম্বরণ করার ক্ষমতা কম বা একেবারেই নেই, তাদের মনের জোর কম কিংবা একেবারেই নেই। তাদের মধ্যে হঠাৎ একটি ভয়ঙ্কর তড়িৎ প্রবাহের মত আচমকা আত্মহণনের প্রবৃত্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তখন তাদের বিচারশক্তি একেবারেই লোপ পায়, বিবেচনা করার ক্ষমতা থাকেনা। তখন তারা নিজেদের চোখ দিয়ে দেখেনা, নিজেদের কান দিয়ে শোনেনা, সম্পূর্ন বিচার-বুদ্ধি হারিয়ে ফেলে, মনের সমত্ব রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করে ফেলে। তাই বলা চলে আত্মহত্যা একটি সাময়িক পাগলামীর চূড়ান্ত লক্ষণ। অবশ্যি পূর্ব লক্ষণ হিসেবে আত্মসম্বরণ করার ক্ষমতা কম বা একেবারেই নেই প্রকাশ পাওয়া স্বাভাবিক।

প্রশ্ন হল তাদের মনের সমত্ব রক্ষা হয়না কেন? কেন তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবৃত্তি আসে? হস্তরেখাবিদ্যায় তার জবাব আছে। আমি সকল শ্রেনীর সাধারন পাঠকের জন্য অতি সহজে বুঝবার সুবিধার্থে চিত্র সহ উপস্থাপন করছি, কোন রেখাটি থাকলে মানুষ আত্মহত্যা করতে পারে। যা বুঝতে কাউকে হস্তরেখাবিদ হতে হবেনা। যদিও হস্তরেখাবিদ্যা শুধুমাত্র কোন একটি রেখার ওপর ভিত্তি করে ফলাফল বর্ননা করেনা। সেই সাথে হাতের শ্রেনী, গঠন, বৈশিষ্ট্য, আঙ্গুলের গঠন, বৈশিষ্ট্য, বিশেষকরে বৃদ্ধাঙ্গুলির গঠন, বৈশিষ্ট্য, গ্রহাদির ক্ষেত্র সমূহের শুভাশুভ সহ অন্যান্য রেখা ইত্যাদি অনেককিছুর ওপর সম্পূর্ন ফলাফল নির্ভর করে। তবুও যদি কারো হাতে এইরূপ বা কাছাকাছি আকারের রেখার অস্তিত্ত্ব দেখা যায়, সেই সাথে তার মনের জোর কম আছে বলে মনে হয়, কিংবা তার আচরন সন্দেহজনক বলে ধারনা করেন, তবে অবশ্যই তাকে শীঘ্রই কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

হস্তরেখাবিদ্যায় একটি প্রধান রেখার নাম- শিরোরেখা। এই রেখাটি বৃদ্ধাঙ্গুল ও তর্জনীর মাঝামাঝি অংশ থেকে শুরু হয়। অন্যান্য রেখার তুলনায় শিরোরেখাটি মোটামুটি স্বাধীন, অর্থাৎ অন্য কোন রেখা, গ্রহ, চিহ্ন, আঙ্গুল বা হাতের গঠন বৈশিষ্ট্য খুব বেশি শিরোরেখাটিকে প্রভাবিত করতে পারেনা। তবে একেবারে যে প্রভাবিত করেনা- তা নয়। মানুষের জীবনে যেমন মানসিক ও বাস্তবিক দুইটি আলাদা দিক আছে, করতলকেও তেমনি দুইটি ভাগে ভাগ করে বিচার করা হয়। আর এই ভাগটি করে দেয় শিরোরেখা। যার ওপরের অংশটি থেকে মানসিক ভাবধারা এবং নীচের অংশটি থেকে বস্তুগত চিন্তাধারার ইঙ্গিত দেয়।

যদি শিরোরেখাটি আরেকটি প্রধান রেখা আয়ুরেখার উৎপত্তি স্থলের সঙ্গে মিশে শুরু হয়ে বেঁকে বিপরীত দিকের নীচের কোনার দিকে অর্থাৎ চন্দ্রের ক্ষেত্রের দিকে ঢালু হয়ে নেমে যায়,- তবে তার মানসিক ভাগটির অংশ বৃদ্ধি পায় বাস্তব অংশের তুলনায়। ফলে ধারকের জীবন হয়- বাস্তবতা বর্জিত এবং কল্পনা ও চিন্তার অতলে সে হাবুডুবু খায়। সেই সঙ্গে কোন দুঃখ, ব্যাথা, বেদনা সহ্য করতে পারেনা, সে হয় অতিরিক্ত সংবেদনশীল। এদের হাতে যদি মধ্যমাঙ্গুলির নীচের অংশে শনির ক্ষেত্র উঁচু হয়- তাহলে তাদের মধ্যে একদিকে আসে অত্যন্ত জেদীভাব, অন্যদিকে ভয়ঙ্কর হতাশারভাব। অনেক সময় তাদের এই অতিরিক্ত হতাশা থেকে এইরূপ মানসিক প্রবনতা আসতে পারে যে,- দুঃখভরা পৃথিবীটাকে তারা তাদের বাসস্থান হিসেবে আর মেনে নিতে পারেনা। ফলে আত্মহত্যাকেই শ্রেয় মনে করে করুন পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়। নীচের চিত্রে লাল রংয়ে অঙ্কিত রেখাটি সেইরূপ শিরোরেখার একটি কাছাকাছি উদাহরন।

আত্মহত্যাকারীর রেখা

তাইবলে কেউ যেন মনে না করেন যে, হুবহু এইরূপ কারো হাতে পাওয়া গেলেই সে আত্মহত্যাকারী হবে। কেননা, শিরোরেখা চন্দ্রের ক্ষেত্রের দিকে নেমে এলেও চন্দ্রের ক্ষেত্রটি যদি উন্নত হয়, ও শনির চেয়ে তর্জনীর নীচে বৃহস্পতির ক্ষেত্র উচ্চ এবং সুস্পষ্ট ও সুগঠিত হয়,- তাহলে তাদের বিচার-বুদ্ধি ভাল হওয়ায় বিপদে বা দুঃখে অত্যন্ত ম্রিয়মান হলেও জীবনের জুয়া খেলায় সহজে হার মানতে চায়না। তাই তারা সাধারনত আত্মহত্যার শিকার হয়না।

পরিশেষে বলছি, আত্মহত্যাকারীরা অনেক পূর্ব লক্ষন রেখে যায়, যেমন- তারা খুব চুপচাপ থাকে, অনেকে আগের তুলনায় ভাল হয়ে যায় ইত্যাদি। রেখে যায় অনেক কারনও, যেমন- বিষাদময় পারিবারিক পরিবেশ, মানসিক বা শারিরীক যাতনা ইত্যাদি। রেখে যায় আত্মহত্যায় আগ্রহী হওয়ার মত কিছু পরিবেশ-পরিস্খিতি, ব্লু হোয়েল গেমের পরিণতিও আমি মনে করি তেমনি একটি। আমরা একটু সচেতন হলে রক্ষা করতে পারি অনেক জীবন। পোস্টটিকে জনসচেতনতা মূলক পোস্ট হিসেবে বেশি বেশি শেয়ার করে জনগনকে সচেতন করা আপনাদেরও নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি।

2 responses

  1. অামি হস্থরেখা বিশ্বাস করি অামি অাপনার সাথে খুব জলদি যোগাযোগ করতে চাই।দয়াকরে সরাসরি যোগাযোগ এর একটা মাধ্যম বলেন।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান